কাজী মামুন, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠী ইউনিয়নের শশুর বাড়ি থেকে মিতু আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূর মৃত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি তাকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে ।ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২২ জুন-২০২০ ইং) সদর উপজেলার জৈনকাঠী ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডের মধ্য চাড়াবুনিয়া গ্রামের মনপুরা স্টেশন সংলগ্ন মারোয়ান বাড়িতে। গৃহবধূ মিতু একই ইউনিয়নের ফেদাই নগর ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ কবির মৃধার মেয়ে।সরেজমিনে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, গত দেড় বছর আগে ফেদাই নগরের বাসিন্দা মোঃ কবির মৃধার বড় মেয়ে মিতু আক্তার ও পাশের গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে রহিম (৩০), পিতাঃ আঃ রশিদ মারোয়ান এর ছেলের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। গত আড়াই মাস আগে তাদের ঘরে একটি সন্তান জন্ম গ্রহণ করে।সরেজমিনে মিতুর পরিবার জানান, বিয়ের পর থেকে বার বার যৌতুকের টাকার দাবি করে মিতুর স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজন মিতুর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। ঝগড়া বিবাদের কারণে গত চার মাস যাবত মেয়েটা আমাদের বাড়িতে থাকতো। সমস্যা সমাধানের জন্য মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে আমরা কয়েকবার গিয়েছি, তারা আমাদের সাথেও খারাপ আচরন করেছে। সন্তানের বয়স প্রায় আড়াই মাস এর মধ্যে শশুর বাড়ির লোকজন তেমন কোন খোঁজ খবর নেয়নি। গত শুক্রবার বিকেলে তার ভাসুর সেনা সদস্য শফিকুল ইসলাম ও জাল ইয়ানুর বেগম এসে মিতুকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায় আর আজকে আমার মেয়ে লাশ হয় , তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে,আমি এর বিচার চাই ।এপ্রসঙ্গে গৃহবধূ মিতুর শাশুড়ী সায়েদা বেগম জানান, তাদের পরিবারের কারো সাথে গৃহবধূ মিতুর সাথে কখনও কোনদিন ঝগড়া ঝামেলা হয়নি। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করেন তিনি । এদিকে মিতুর স্বামী রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, গত রাতে ১০ টার সময় আমরা ঘুমিয়ে পড়ার আগেও ছেলে রফিকুল বাসায় ছিলো সকালে উঠে তার দেখা পাইনি এখন পর্যন্ত সে কোথায় আছে জানিনা এবং বড় ছেলে সেনা সদস্য ১০ দিনের ছুটিতে বাড়ি আসে সেও আজ খুব সকালে তার কর্মস্থলে চলে গেছে। এসময় তিনি আরও বলেন, সকাল বেলা ছেলের বউকে ডাকাডাকি করলে কোন সারা শব্দ না পেয়ে তার ঘরে ঢুকে তাকে বিছানায় সোজা হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন পাশে তার ছেলে নেই ছোট নাতি কাদছে।এব্যাপারে স্বামী রফিকুল ইসলাম মারোয়ান ও সেনা সদস্য শফিকুল ইসলাম মারোয়ানের সাথে যোগাযোগ করতে তাদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।স্থানীয় রাহিমা বেগম পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (ঈঝই) এর কর্মী জানান, আসলেই এটা রহস্য জনক হত্যা, মিতুর গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা গিয়ে লাশ বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পেয়েছি । দেখে মনে হচ্ছে, তাকে মেরে ফেলার আগে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত ও মেডিকেল রিপোর্ট করে সত্যিটা বের করে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের মাধ্যমে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান।এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, একটা নিরীহ মেয়ে ছিলো মিতু এখন তার মৃত্যুতে আড়াই মাস বয়সের শিশুটির কি হবে। এরা নিষ্ঠুর অমানুষ জল্লাদ পরিবার,এই খুনি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি আমরা এলাকাবাসী।এবিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আখতার মোর্শেদ প্রতিবেদককে বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে, মেডিকেল রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সঠিক তথ্য বলা যায় না এবং এব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে যদিও ঘটনার পর থেকে স্বামী ও ভাসুর পলাতক রয়েছে ,জরিতদের গ্রেফতারের ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলছে।
Leave a Reply